ছুটির দিন সন্ধ্যা
মালয়েশিয়ায় থাকলে যদি কখনো বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ নিতে মন চায়, তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই! এখানে অসংখ্য বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট রয়েছে—সাধারণ খাবার থেকে শুরু করে একেবারে ঐতিহ্যবাহী স্বাদের খাবার পর্যন্ত সবই পাওয়া যায়। বিশেষ করে বুকিত বিনতাং, মসজিদ জামেক, ব্রিকফিল্ডস, সানওয়ে - সহ অনেক এলাকায় অনেক ভালো রেস্টুরেন্ট আছে।
বাংলাদেশি স্ট্রিট ফুড যেমন ফুসকা, চটপটি, পিঠা পেতে চাইলে সানওয়ে তে স্টার কাবাব বা বুকিত বিনতাং-এর VIP পিঠাঘর বেশ ভালো একটি জায়গা। এছাড়া পিঠাঘর, ঢাকা তেহারি, রসনা বিলাস, স্টার কাবাব—এ ধরনের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টও রয়েছে।
স্টার কাবাবে এক আনন্দঘন মিলনমেলা
আজ আমরা গিয়েছিলাম স্টার কাবাব-এ। এই রেস্টুরেন্টটি দুটি তলায় রয়েছে—একটি খাবারের জন্য এবং অন্যটি ইভেন্টের জন্য কমিউনিটি হল। এখানে অনায়াসে ৭০-৮০ জন নিয়ে ইভেন্ট আয়োজন করা সম্ভব। বুফে সিস্টেমে খাবার পরিবেশন করার ব্যবস্থাও রয়েছে, পছন্দমত খাবার ম্যানু বলে অর্ডার করতে পারবেন। পাশাপাশি স্টেজ ও সাউন্ড সিস্টেম থাকায় এটি যেকোনো সাংস্কৃতিক বা সামাজিক আয়োজনের জন্য চমৎকার একটি জায়গা। এছাড়া হুইলচেয়ার অ্যাক্সেসযোগ্য এন্ট্রেন্স রয়েছে, পার্কিং করে লিফটের মাধ্যমে সরাসরি ইভেন্টের স্থানে পৌঁছানো যাবে।
আজকের গ্যাদারিং-এ বাংলাদেশি খাবারের বাহার ছিল চোখে পড়ার মতো! বিশেষ করে বাংলাদেশি স্বাদে থাই স্যুপ, ওনথন এখানে বেশ ভালো লেগেছে।
মেনুতে যা ছিল:
স্টার্টার: দেশি থাই স্যুপ ও ওনথন
মূল খাবার: গরু, খাসি ও মুরগির রোস্ট, সবজি, পোলাও, ডিম, কাবাব, পরোটা, সালাদ
ডেজার্ট: পুডিং, জর্দা পোলাও, পান ও পান মশলা
পানীয়: জুস, কোল্ড ড্রিংকস, চা
আমি যথারীতি সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করে প্রথমেই এক কাপ চা নিলাম, কারণ আজকে আমার গলা একটু খুশখুশ করছিল। এরপর স্যুপ ও ওনথন খেয়ে মেইন কোর্সে গেলাম। খাবার ছিল এক কথায় অসাধারণ!
পানের প্রতি আমার বিশেষ আগ্রহ নেই, কিন্তু @PavelSarwar তো পান পেলে খেতেই হবে, তাই সে বেশ উপভোগ করল!
বাংলাদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া
বিদেশের মাটিতে থেকেও আমরা বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে ভুলে যাই না। তাই ২২ ফেব্রুয়ারি “বসন্ত বরণ” উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই ইভেন্টে থাকবে গান, নাচ এবং আরও অনেক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আজকের গ্যাদারিং-এ সেটি নিয়ে অনেক আলোচনা হলো।
গল্প, আড্ডা, Google Maps ও Local Guides নিয়ে আলোচনা
গ্যাদারিং-এর বিভিন্ন টেবিলে নানা ধরনের আলোচনা চলছিল—কোথাও রান্না নিয়ে, কোথাও নাটক-সিনেমা নিয়ে, আবার কোথাও বাচ্চাদের গল্প নিয়ে। আমি বিভিন্ন টেবিল ঘুরে সবার সঙ্গে গল্প করলাম এবং একই সঙ্গে গুগল ম্যাপে কিভাবে কন্ট্রিবিউট করা যায়, কীভাবে নতুন জায়গা যোগ করা যায়, রিভিউ লেখা যায়, ছবি যোগ করা যায়—এসব বিষয়েও কথা বললাম। কেউ আগে থেকেই এসব জানতো, আবার অনেকেই নতুনভাবে জানলো।
বিশেষ করে, Google Maps-এর ২০ বছর এবং Local Guides-এর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা অনেক স্মৃতি রোমন্থন করলাম। কিভাবে Google Maps আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে এবং Local Guides কমিউনিটি কীভাবে বিশ্বজুড়ে মানুষের জন্য অবদান রেখে চলেছে, তা নিয়ে আলোচনা হলো। নতুন অনেকেই Local Guides প্রোগ্রামে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করলো।
এই গ্যাদারিং ছিল একেবারে ফ্যামিলি-ফ্রেন্ডলি। সবাই মিলে দারুণ একটা সময় কাটালাম। প্রবাসে থেকে আমরা সবসময় বাংলাদেশি খাবার ও সংস্কৃতিকে মিস করি, তাই এ ধরনের আয়োজন আমাদের জন্য আনন্দের বড় একটি অংশ হয়ে ওঠে।
আপনাদের মধ্যে কেউ মালয়েশিয়া ভ্রমণ করে থাকলে বা মালয়েশিয়ায় বসবাস করেন এবং কোনো বাংলাদেশি রেস্তোরাঁয় দেশীয় খাবারের স্বাদ নিয়ে থাকলে, আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে পারেন!